বোয়েটেং ৬ : ১ ওয়ান্ডারার্স
০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০১ এএম | আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০১ এএম
ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) প্রথম শিরোপা জয়ের পথে ছয় ম্যাচের সবগুলো জিতে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। অন্যদিকে লিগের ষষ্ঠ রাউন্ডে ঘানার ফরোয়ার্ড স্যামুয়েল বোয়েটেংয়ের ডাবল হ্যাটট্রিকে বড় জয় পেয়েছে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি।
গতকাল ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনীকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দেয় মোহামেডান। বিজয়ী দলের হয়ে স্থানীয় ফরোয়ার্ড সৌরভ দেওয়ান দু’টি এবং বুরকিনা ফাসোর ডিফেন্ডার মোনজির কলিদিয়াতি ও নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড ইমানুয়েল সানডে একটি করে গোল করেন। চট্টগ্রাম আবাহনীর ডিফেন্ডার সেলিম রেজার কল্যাণে অন্য গোলটি হয় আত্মঘাতি। চট্টগ্রাম আবাহনীর পক্ষে পেনাল্টি থেকে একমাত্র গোলটি শোধ দেন স্থানীয় মিডফিল্ডার ইমতিয়াজ সুলতান জিতু। এদিন মুন্সীগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে.মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবকে ৬-১ ব্যবধানে বিধ্বস্ত করে পুরান ঢাকার জায়ন্ট কিলার খ্যাত রহমতগঞ্জ। দলটির হয়ে ঘানার ফরোয়ার্ড স্যামুয়েল বোয়েটেং একাই করেন ছয় গোল। ওয়ান্ডারার্সের পক্ষে সান্তনার এক গোল শোধ দেন ফরোয়ার্ড সাইফ সামসুদ।
পেশির ইনজুরির কারণে আগের ম্যাচে খেলেননি মোহামেডানের নিয়মিত অধিনায়ক সুলেমানে দিয়াবাতে। কালও তাকে ছাড়া চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল মোহামেডান। একে তো একাদশে নেই অধিনায়ক,তারওপর ম্যাচের ২২ মিনিটে দশজনের দলে পরিণত হয় সাদাকালোরা। তখনও কোনো গোল পায়নি আলফাজ আহমেদের দল। ম্যাচ জেতা সহজ হবে কিনা তা নিয়ে ছিল সংশয়। তবে সব শংকা কাটিয়ে বেশিরভাাগ সময় একজন কম নিয়ে খেলে ঠিকই সহজ জয় তুলে নিলো মতিঝিলের দলটি। ম্যাচের শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দিলেও ২২ মিনিটে মারাত্মক ফাউলের কারণে লাল কার্ড দেখেন মোহামেডানের ডিফেন্ডার শাকিল আহাদ তপু। এসময় লাফিয়ে ওঠা বলে হেড করতে গিয়েছিলেন চট্টগ্রাম আবাহনীর অনিক ঘোষ, একই সময়ে উঁচু করে ডান পা চালিয়ে দেন তপু। তার পা গিয়ে লাগে অনিকের কাঁধের নিচে! ব্যথায় কাতরাতে কাতরাতে মাঠেই শুয়ে পড়েন অনিক। বিপদজনক ফাউলের কারণে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পেয়ে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন তপু। ১০ জন নিয়ে রহিম উদ্দিন, ইমানুয়েল সানডেরা শত চেষ্টা করেও ম্যাচের প্রথমার্ধে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়াতে পারেননি। তবে বিরতির পর দুর্বার মোহামেডানকে আর আটকাতে পারেনি চট্টগ্রাম আবাহনী। ম্যাচের ৪৭ মিনিটে গোলের খাতা খোলে মোহামেডান। এসময় মুজাফফরভের কর্নারে মানজির কলিদিয়াতি লাফিয়ে উঠে হেডে বল জালে জড়িয়ে দেন (১-০)। মিনিট আটেক পর আরিফ হোসেনের দারুণ এক কাটব্যাক থেকে সানডে প্লেসিং করে ব্যবধান বাড়ান (২-০)। ৬৩ মিনিটে মোহামেডানের ঘানার মিডফিল্ডার আর্নেস্ট বোয়েটেং বক্সে ঢুকে ডান পায়ের জোরালো শট নিলে তা সাইডবারের নিচে লেগে ফেরত আসে, দৌড়ে এসে জায়গা করে নিয়ে ফিরতি বলে জোরালো শট নিয়ে জাল কাঁপান সৌরভ (৩-০)। ম্যাচের ৮৮ মিনিটে সানডের ক্রস চট্টগ্রাম আবাহনীর ডিফেন্ডার সেলিম রেজা ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালে বল জড়িয়ে দেন (৪-০)। মিনিট দুয়েক পর সৌরভ নিজের দ্বিতীয় ও দলের হয়ে পঞ্চম গোল করেন (৫-০)। ম্যাচের যোগকরা সময়ে (৯০+ ৫মিনিট) চট্টগ্রাম আবাহনীর ইমতিয়াজ সুলতান জিতু পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্যবধান কমান (১-৫)। এই জয়ে ছয় ম্যাচের সবগুলো জিতে ১৮ পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ স্থান ধরে রাখলো মোহামেডান। সমান ম্যাচে সবগুলো হেরে তলানীতে পয়েন্টশূন্য চট্টগ্রাম আবাহনী।
এদিকে মুন্সীগঞ্জে বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে.মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে দিনের অন্য ম্যাচে ঢাকা ওয়ান্ডারার্সের বিপক্ষে গোল উৎসবে মেতেছিল রহমতগঞ্জ। ৬-১ গোলে জেতা ম্যাচে রহমতগঞ্জের ঘানার ফরোয়ার্ড স্যামুয়েল বোয়েটেং একাই ছয় গোল করে সবাইকে চমকে দেন। ম্যাচের ২৩, ৩৭, ৪৪, ৬৩, ৬৬ ও ৭০ মিনিটে গোল করে নিজের ডাবল হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন বোয়েটেং। এই ডাবল হ্যাটট্রিকের সুবাদে লিগে এখন পর্যন্ত ১০ গোল করে এক লাফে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছেন তিনি। ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের চেক সিনে ৬ গোল নিয়ে নেমে গেলেন দ্বিতীয় স্থানে। এর আগে দেশের পেশাদার ফুটবল লিগের প্রথম আসরে ২০০৭ সালে ডাবল হ্যাটট্রিক করেছিলেন মোহামেডানের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড পল নোয়াচুকু। ওই আসরে রহমতগঞ্জের বিপক্ষে মোহামেডানের ৭-১ গোলের জয়ে নোয়াচুকু একাই ছয় গোল করেছিলেন। বাকি একটি গোল করেছিলেন মোহামেডানের তৎকালীন মিডফিল্ডার কামাল হোসেন। আর রহমতগঞ্জের পক্ষে এক গোল শোধ দিয়েছিলেন আশরাফুল আউয়াল অপু। তবে ঢাকার মাঠে ডাবল হ্যাটট্রিক এ দু’টিই শেষ নয়। ১৯৭৩ সালে একই বছর ঢাকা লিগে দুই ডাবল হ্যাটট্রিক হয়েছিল। যার একটি করেছিলেন মোহামেডানের মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (ফায়ার সার্ভিসের বিপক্ষে ছয় গোল) এবং অন্যটি ঢাকা আবাহনীর কাজী মো. সালাউদ্দিন (দিলকুশার বিপক্ষে সাত গোল)। ম্যাচ জিতে ছয় ম্যাচে পাঁচ জয় ও এক হারে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে রহমতগঞ্জ। সমান ম্যাচে একটি করে জয় ও ড্র এবং চার হারে ৪ পয়েন্ট পেয়ে অষ্টম স্থানে ওয়ান্ডারার্স।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রাশিয়া
রাজনীতি ও রাষ্ট্রাচার ব্যবসায়িক পণ্যে পরিণত হয়েছে : সেলিম উদ্দিন
ভারতে ঢুকে পড়েছে এইচএমপিভি
আন্তর্জাতিক আইকিউ টেস্টে দ্বিতীয় ইরান
গণঅধিকার পরিষদের ফারুকের ওপর হামলা : দুই আসামির জামিন
লেনদেন ও সূচকের উত্থান পুঁজিবাজারে চাঙাভাব
খালেদা জিয়ার নাইকো মামলায় ৩২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ
পাবনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী কাঙ্গাল বাবু গ্রেপ্তার
১৫ হাজার পিচ ইয়াবার মামলায় প্রবাসীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে : মাহমুদুর রহমান
বৃদ্ধাশ্রমের বাবা মায়ের পাশে জেলা প্রশাসন সব সময় আছে এবং থাকবে
তামিমের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের দিন প্রশ্নবিদ্ধ এনামুল
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে চীনের সহযোগিতা চান পরিবেশ উপদেষ্টা
গাজীপুরে বিএনপির বিক্ষোভ
সোনারগাঁওয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি দখলের অভিযোগ
র্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার প্রতিশ্রুতি শেকৃবি ভিসির
অংশীজনদের সঙ্গে আজ বসছেন অর্থ উপদেষ্টা
কোম্পানীগঞ্জের ইউএনওর নাম্বার ক্লোন করে শিক্ষকের কাছে টাকা দাবি
সমস্যাগ্রস্ত ৬ ব্যাংকের নিরীক্ষায় ২ বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক
অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদারের সিদ্ধান্ত